মোঃ কেফায়েত উল্লাহ শরীফঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট পারমিট (ইএক্সপি) জটিলতা কাটিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় মাছ রপ্তানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ১০ টি গাড়িতে করে প্রায় ৭০ মেট্রিকটন বরফায়ীত মাছ আগরতলায় রপ্তানি হয়েছে। তার আগে সকাল থেকে ৩ টি ট্রাকে করে ৯০ মেট্রিকটন পাথর ও ৬ টি ট্রাকে করে ১০৬ মেট্রিকটন ভোজ্য তেল ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় রপ্তানি হয়েছে। গত বুধবার এক্সপোর্ট পারমিট (ইএক্সপি) জটিলতায় মাছ ব্যাতিত সিমেন্ট ও ভোজ্য তেল রপ্তানি হয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের মৎস্য রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক মিয়া বলেন, মাছ রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইএক্সপির প্রয়োজন হয়। ওই কাগজপত্র মাছ ব্যবসায়ীদের হাতে না পৌঁছানোয় গতকাল বুধবার ব্যবসায়ীরা ভারতে মাছ রপ্তানি করতে পারেননি। আজকে বৃহস্পতিবার এক্সপোর্ট পারমিট জটিলতা কাটিয়ে সকাল থেকে মাছ রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে।
এদিকে ভারত সরকার হঠাৎ করে বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে ছয়টি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতমুখী রপ্তানি বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বন্দর দিয়ে ভারতে ৪২৭ কোটি ৮৮ লাখ ৭২ হাজার ৪৩০ টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। আর চলতি অর্থবছরে গেলো এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি হয় ৪৫৩ কোটি ১ লাখ ৯৬ হাজার ৭৯৩ টাকার পণ্য। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে হিমায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, প্লাস্টিক, ভোজ্য তেল, তুলা, প্রক্রিয়াজাত খাবার, মেলামাইন সামগ্রী ও শুটকি।
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, হিমায়িত মাছের পর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় প্লাস্টিক পণ্য, পিভিসি সামগ্রী, চিপস, বিস্কু, ফলের স্বাদযুক্ত জুস ও তুলা। প্রতিদিন প্রায় ৪০-৪৫ লাখ টাকা মূল্যের এসব পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। ফলে এ পণ্যগুলো আমদানি নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ায় রপ্তানি বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মূলত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ভারতের সঙ্গে চলা কূটনৈতিক টানাপোড়েনের কারণেই দেশটির সরকার আমদানির সুযোগ সীমিত করেছে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের। যা দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার দাবি তাদের।
প্রসঙ্গত, দেশের অন্যতম বৃহৎ ও শতভাগ রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন বরফায়ীত মাছ, সিমেন্ট, ভোজ্য তেল, প্লাস্টিক, বর্জ তুলা ও খাদ্য সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় যায়। সেখান থেকে রপ্তানিকৃত পণ্য সরবরাহ করা হয় দেশটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে।