মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান; আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে পৃথক পৃথক মৌসুমে পৃথক পৃথক ফলফলাদি দান করেন।আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে বৈশাখ, জৈষ্ঠ্যমাসে মূলত নানা মুখরোচক ফল উৎপাদন হয়ে থাকে। ফলের মৌসুমকে বলা হয় মধুমাস। বর্তমানে বাংলাদেশে চলছে মধুমাস অর্থাৎ ফলফলাদির মাস।এসব ফলফলাদি আল্লাহতায়ালার বিশেষ নেয়ামত।
আল্লাহ প্রদত্ত সকল নেয়ামতে দরিদ্র, অভাবগ্রস্থ, অসহায়দের শরিক করা মুমিনদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।মৌসুমের নতুন ফল বাজারে এলে নিজে কিনে খাওয়ার পাশাপাশি দরিদ্র প্রতিবেশীদের বিষয়ে ও খেয়াল রাখা প্রয়োজন। কারণ এমন অনেকেই হয়তো আমাদের আশপাশে থাকে যারা নিজেরা কিনে ফল খাওয়ার সামর্থ্য রাখেনা।
আমাদের পূর্বসূরী আক্বাবির আসলাফদের মাঝে শুধু ফলফলাদির বিষয়ে ই নয় বরং ফলের ছিলকা দেখে ও যেনো গরীব প্রতিবেশীদের মনে কষ্ট না আসে সেদিকেও খেয়াল রাখতেন।তেমনি এক আক্বাবিরের ঘটনা উল্লেখ করছি নিজেদের ইবরত হাসিলের উদ্দেশ্যে।
আওলাদে রাসুল(সা:) হজরত হোসাইন আহমদ মাদানী (রহ)। যিনি ভারত উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম, বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার, মাদানী সিলসিলার মূল প্রবক্তা।
একবার তার ঘরে মেহমান হলেন এক আলেম। মেহমানকে আপ্যায়িত করতে দেওয়া হলো ফলমূল। খাবার শেষে মেহমান বললেন হজরত, অনুমতি দিলে ফলের ছিলকা গুলো বাহিরে কোথাও ফেলে আসি।
মাদানী (রহ) বললেন, ছিলকা ফেলতে পারো তো? ঐ আলেম বললেন, ছিলকা ফেলতে পারার কি আছে? মাদানী (রহ) বললেন, আমার আশপাশে গরীব পরিবার ও বসবাস করে। সকল ছিলকা যদি একসাথে ফেলে দাও,তাহলে ঐ গরীব পরিবার,ফল গুলোর ছিলকা দেখে না খেতে পারার আক্ষেপে তাদের মনে খুব কষ্ট অনুভব করবে।তাই তাদের কথা চিন্তা করে অল্প অল্প করে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ফলের ছিলকা গুলো ফেলে আসো। সুবহানাল্লাহ।
আল্লাহতায়ালা আমাদের বড়দের চিন্তা, ফিকির ও দিয়েছিলেন বড়। উম্মতের প্রতি তাদের দরদ ছিল সীমাহীন। আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে আমাদের আক্বাবির আসলাফদের রুহানি তাওয়াজ্জুহাত নসিব করুন।