ঢাকা, বাংলাদেশ মঙ্গলবার ১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ আর্কাইভ
হোম  »  ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্সের বৈঠকে হট্টগোল স্টাফদের মারধোরের অভিযোগ

মোঃ কেফায়েত উল্লাহ শরীফঃ 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির কার্যকরী কমিটির সভা চলাকালীন সময়ে একদল লোক ঢুকে হট্টগোল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় চেম্বারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লঞ্ছিতসহ মারধর করে নগদ টাকা, মুঠোফোন ও কম্পিউটারের এসএসডি কার্ড নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ।
আজ সোমবার দুপুরে জেলা শহরের মসজিদ রোড এলাকায় অবস্থিত চেম্বার ভবনে এঘটনা ঘটে।
চেম্বারের সচিব আজিম উদ্দিনকে লাঞ্ছিত করে দুটি মুঠোফোন ও ১০ হাজার টাকা, হিসাবরক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে মারধর করে নগদ ২২ হাজার টাকা ও কম্পিউটারের এসএসডি কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রির পরিচালক ও চেম্বারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগামী জুলাই মাসে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স ’এ’ শ্রেণির হওয়ায় এফবিসিআইয়ের কাছে ছয়জন ভোটারের নাম পাঠাতে বলা হয়েছে। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে সভা করে চেম্বারের বর্তমান কমিটি।
ছয়জন ভোটারের নাম নির্বাচন করতে সভায় বর্তমান ২০সদস্যের কমিটির মধ্যে সাতজন কার্যকরী সদস্য সভায় বসেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন চেম্বারের সভাপতি আজিজুল হক, সহসভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর ও বাবুল মিয়া, পরিচালক আজিজুর রহমান, জুয়েল খান, তানভির আহমদ, জাবেদুল ইসলাম।
সভা চলাকালীন সময়ে একদল বহিরাগত লোক অতর্কিতভাবে চেম্বারে প্রবেশ করে সভা বন্ধ করতে বলেন। তাদের সঙ্গে চেম্বারের সদস্য কাজল মিয়াসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে তারা চেম্বারের সভাপতি আজিজুল হকের সঙ্গে উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এনিয়ে চেম্বারের সদস্যদের সাথে তাদের কথা কাটাকাটি ও হট্টগোল হয়।
বহিরাগতরা এক পর্যায়ে কক্ষে ঢুকে চেম্বারের সচিব আজিম উদ্দিনকে লঞ্ছিত করে ড্রয়ার থেকে দুটি মুঠোফোন ও নগদ ১০ হাজার টাকা, আরেকটি কক্ষে ঢুকে ভয় দেখিয়ে অফিস সহায়ক দুলাল মিয়ার মাধ্যমে কম্পিউটারের এসএসডি কার্ড ও একই কক্ষের হিসাবরক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে টেনেহেঁচড়ে বের করে মারধর করেন।
এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা নিয়ে যান তারা। খবর পেয়ে বেলা দুইটার দিকে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
এক মিনিট ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সভাপতি আজিজুল হকসহ সাতজন সভা করছিলেন। সেসময় চেম্বারের সদস্য কাজল মিয়াসহ কয়েকজনকে সভায় ঢুকতে দেখা গেছে। কাজল সভাপতি আজিজুলের দিকে এগিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক সভার রেজুলেশন খাতা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।
চেম্বারের অন্যান্য সদস্যদের বাঁধার কারণে তিনি তা নিতে পারেননি। সবাই বসে কথা বলতে বললেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।
চেম্বারের হিসাবরক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একদল লোকজন চেম্বারে আসেন। আমাকে কক্ষ থেকে বের করে মারধর করেন। টানাহেঁচড়ায় শার্টের বোতাম ছিড়ে গেছে। তারা পকেট থেকে ২২ হাজার টাকা নিয়ে গেছে।
চেম্বার অব কর্মাসের সাধারণ সদস্য কাজল মিয়া বলেন, এই কমিটির অধিকাংশরাই আওয়ামী পন্থী লোক। তারা চেম্বারে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও চুরি করেছে। কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সভাপতি আজিজুল হক, সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীরসহ অধিকাংশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। আর গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে তারা কোনো সভা করেনি।
জেলার নাগরিক ও ব্যবসায়ী হিসেবে তাদের অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করা আমার দায়িত্ব। সাদাকে সাদা ও কালাকে কালা বলতে হবে। তারা সভা করতে পারেনি। পাঁচমিনিট বসেই চলে গেছে। তারা সভা করতে চাইলে সবাইকে জানিয়ে সভা করুক। এভাবে চুপিসারে কেন।
এ ব্যাপারে জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আজিজুল হক বলেন, সভা করে চলে আসার পর একদল লোক চেম্বারে ঢুকে সচিব আজিম উদ্দিনকে লাঞ্ছিত ও হিসাবরক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে মারধর করে। তাদের কাছ থেকে টাকা ও মুঠোফোন নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। চেম্বারে আওয়ামী পন্থী সদস্যরা সভা করতে এসেছিল। দুই থেকে আড়াই মিনিট বসে তারা চলে গেছে। সভাপতি-সহ-সভাপতিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। বিএনপি পন্থী চেম্বারের সদস্যরা সেখানে যান। সভা করেছে কি না রেজুলেশন দেখতে চান। এনিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে শুনেছি।
 চেম্বারের কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে নগদ টাকা ও মুঠোফোন নিয়ে গেছে বলে তারা জানিয়েছে। কিন্তু কারা করেছে কেউ কিছু বলতে পারেনি। মারধরের বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।