সাইদুল মোস্তাক জুয়েলঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের সামনে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং একটি দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটক নির্মাণের জন্য অবৈধ বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশের প্রতিবাদে জেলা শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ওষুধের দোকান বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা।
আজ সোমবার(২৭ অক্টোবর) ভোর থেকেই জেলা শহরের সকল ফার্মেসি বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছে, বিশেষ করে রোগী ও তাদের স্বজনরা। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার আহবানে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মহিলা কলেজের সামনের দোকানগুলো তৎকালীন বেসরকারি কলেজ থাকাকালীন কলেজ প্রশাসনের অনুমোদিত এবং বহু বছর ধরে বৈধভাবে চলছে। হঠাৎ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে অবৈধ বলে উচ্ছেদে উদ্যোগ নেয়, যা ব্যবসায়ীদের জীবিকার ওপর আঘাত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি পৌর শাখার সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, আমরা কলেজের জায়গায় দখল করে ব্যবসা করছি না। কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন সময় আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন অনুযায়ী দোকানগুলো স্থাপন করা হয়েছে। অথচ কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে এটি অবৈধ দখল যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
অন্যদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং একটি দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটক নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, চলাচল ও ক্যাম্পাসের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে শিক্ষা মন্ত্রনালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে কোন ব্যবসায়ীক দোকান থাকতে পারবে না। তাই কলেজকর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশনা মোতাবেক কলেজের জায়গায় গড়ে উঠা দোকানগুলো অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হান্নান খন্দকার বলেন, কলেজের মূল ফটকের সামনে ওষুধের দোকানগুলো দীর্ঘদিন ধরে জায়গা দখল করে রেখেছে। এই জায়গা কলেজের নিয়ন্ত্রণাধীন, তাই উচ্ছেদ বৈধ। আমরা কলেজের নিরাপত্তা পরিবেশ রক্ষা, সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা এ বিষয় জেলা প্রশাসনের সাথে আজ আলোচনা করব। কলেজের স্বার্থে এই দোগানগুলো উচ্ছেদ করা হবে৷
এদিকে কলেজ শিক্ষার্থীদের দোকান অপসারণের পক্ষে অবস্থান নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি, ফটকের সামনে দোকান ও পথের জটের কারণে মেয়েদের চলাচলে বিড়ম্বনা সৃষ্টি হয় এবং কলেজের সৌন্দর্য নষ্ট হয়। আমরা পরীক্ষার সময় ইভটিজিংসহ নানা সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা কলেজের স্বার্থের বিপক্ষে নন, বরং প্রশাসনের মাধ্যমে আলোচনার পথেই সমাধান চান।