ঢাকা, বাংলাদেশ বুধবার ২৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ আর্কাইভ
হোম  »  ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫ বাজারের ব্যবসায়ীদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু

মোঃ ফখরুদ্দিনঃ 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনন্দ বাজারের পুরাতন বাঁশ বাজারের লীজ বাতিল, গ্রেপ্তারকৃত ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম খোকনের মুক্তি এবং হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শহরের চারটি বাজার ও একটি বিপনী বিতানের সকল দোকান-পাট বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন ও বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ী মহল।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আনন্দ বাজার, সড়ক বাজার, লাখি বাজার, টান বাজার ও নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে সড়ক বাজারে জড়ো হন। তাঁরা নিউ মার্কেট ও বিভিন্ন দোকানের সামনে অনিদির্ষ্টকালের ধর্মঘটের ব্যানার টানিয়ে দিয়ে সড়ক বাজারে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।
জানা গেছে, আনন্দ বাজারের পুরাতন বাঁশ বাজারের খাস জায়গার বন্দোবস্ত নিয়ে পুরাতন বাঁশ বাজারে টানানো উপজেলা প্রশাসনের সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলাসহ সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। একটি মামলায় গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে শহরের বাগানবাড়ি এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী জহিরুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি সড়ক বাজারের মেসার্স বস্ত্র বিতানের সত্ত¡াধিকারী।
এর প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ৫টি বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে সড়ক বাজারে জড়ো হন। এক পর্যায়ে তাঁরা বাঁশ বাজারের বন্দোবস্ত বাতিল, ব্যবসায়ী নেতা জহিরুল হকের নিঃশর্ত মুক্তি ও দুটি মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। যানজট নিরসনে ট্রাক স্ট্যান্ড করতে লীজ দেয়া বাঁশ বাজারের লীজ বাতিলের দাবি জানান তারা। বিক্ষোভ মিছিলে ব্যবসায়ী নেতা আবুল কালাম ও মোখলেছ আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
সদর উপজেলা প্রশাসন ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী আনন্দ বাজারসংলগ্ন পুরোনো বাঁশ বাজারে ১নম্বর খাস খতিয়ানের হাট বাজার শ্রেণির পেরিফেরিভূক্ত ২০ দশমিক ৯৪ শতাংশ জায়গা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৩ জনের নামে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। গত ২১ অক্টোবর জায়গাটিতে ঝুলানো সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলেন এবং বন্দোবস্ত বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেন ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় পূর্ব কান্দিপাড়ির মাইমলহাটি আবুল হাসনাত ওরফে ভজনসহ পাঁচজনের নামে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
গত বুধবার দুপুরে বন্দোবস্তের জায়গার সীমানা নির্ধারণের সময় আবুল হাসনাতের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের ও এসিল্যান্ডের কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা করে। এতে ইউএনও’র কার্যালয়ের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলামসহ ১৫জন আহত হন। একইদিন বেলা আড়াইটার দিকে সদর উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও সদর থানা পুলিশ আনন্দ বাজারে অভিযান চালিয়ে অবৈধ দোকান, স্থাপনা উচ্ছেদ করে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনায় আবুল হাসনাত ভজন, প্রেমা মিয়া ওরফে জুম্মান, জহিরুল হক ওরফে খোকন, সুখন, নাদিম ও সাধনের নাম উল্লেখ করে আরেকটি মামলা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১১০জনকে আসামী করা হয়।
ব্যবসায়ীরা বলেন, জেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের নামে জায়গাটি বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে। তবে প্রশাসন তালিকা প্রকাশ করছে না।  এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা বিএনপি ও এনসিপির নেতা-কর্মীরা বাঁশ বাজার ও আনন্দ বাজারের তোহা বাজার পরিদর্শন করে ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বন্দোবস্ত বাতিলের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়। একটি মামলায় পুলিশ এজাহারভুক্ত এক আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে।