সাইদুল মোস্তাক জুয়েল; আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০জন আহত হয়েছে। এসময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের খাদুরাইল গ্রামে এই সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বিগত ইউপি নির্বাচন ও সালিশে নেতৃত্বে দেয়া নিয়ে বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের খাদুরাইল গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।
এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেনের ভাই মোশারফ হোসেন, ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম এবং উপজেলার যুবদলের সদস্য সচিব থেকে বহিস্কৃত নেতা ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সী।
অপরপক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক রায়হান শ্রাবণ ও স্থানীয় গিয়াস উদ্দিন। আধিপাত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
পূর্ব বিরোধের জেরে গত রোববার রাতে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সে সময় বহিস্কৃত যুবদল নেতার লিটন মুন্সীসহ উভয়পক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সোমবার সকাল নয়টার দিকে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র রামদা, বল্লম, ছুরি, এককাইট্টাসহ লাটিশোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে থেমে থেমে বিকেল তিনটা পর্যন্ত সংর্ঘষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে যুবদল নেতা শফিক রায়হান, তার দুই ভাই জহিরুল ইসলাম ও তাজুল ইসলামেরসহ বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাধনা ত্রিপুরা ঘটনাস্থল পৌঁছেন। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে যৌথবাহিনী এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০জন আহত হয়। আহতরা হলেন আমসু মিয়া-(২৪), আকবর মিয়া- (৫০), বকুল মিয়া-(২৮), মোনায়েম খাঁ- (৩৭), রঙ্গু মিয়া-(৩৮), মনির হোসেন-(৩৫), তোফাজ্জল মিয়া-(৩৫), সাইফুল ইসলাম-(২৫), মরম ইসলাম-(৩৫), জাকির হোসেন-(৩৩), লিটন মিয়া-(৩৩), আতিক মিয়া-(২৫), রহিছ মিয়া-(৫৫), মহরম আলীর স্ত্রীর-(২৮)।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আধিপাত্য বিস্তার ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম মেম্বার ও শফিক রায়হন শ্রাবনের পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।