মোঃ কেফায়েত উল্লাহ শরীফঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল ইউনিয়নের দৌলতপুর আশ্রয়নে বসবাসকারী নারীদের কাছে এক আতঙ্কের নাম ভানু মিয়া। ভানুর অত্যাচারে ইতিমধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্প ছেড়েছেন অনেক পরিবার।ভেঙেছে অনেক সংসার। প্রতিবাদ করলেই দেওয়া হয় হত্যার হুমকি । এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের লোকজন একাধিকবার সর্তক করলেও কোন কিছুকেই পাত্তা দিচ্ছে না ভানু।
নিজ স্ত্রী সন্তান থাকার পরও পর নারীর প্রতি তার আসক্তির কারণে আশ্রয়নে নিজেদের স্ত্রী -কন্যা সন্তানদের নিয়ে বসবাস করা অন্য পরিবারগুলোর মাঝে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পেন বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে গত সরকারের সময়ে নিজের বাড়ি-ঘর থাকা সত্ত্বেও তাকে দেওয়া দৌলতপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। সেখানে তিনি নিজের স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করেন । আশ্রয়ণে বসাবসের সুযোগে ভানুর নজর পড়তো আশ্রয়ণের অন্যান্য বাসিন্দাদের স্ত্রী-কন্যাদের উপর। আশ্রয়ণের বাসিন্দা হাসিমের স্ত্রীকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে ভানু। পরে হাসিম তার পরিবার নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প ছেড়ে চলে যায়। রাতের বেলায় নারীদের ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে ভানু।গোসলের সময় মহিলাদের বিরক্ত করার অভিযোগ রয়েছে ভানুর বিরুদ্ধে। কেউ প্রতিবাদ করলে দেওয়া হয় প্রাণনাশের হুমকি । ভানুর এমন অত্যাচারে আশ্রয়ণ ছেড়ে চলে গেছে অনেক পরিবার।
আশ্রয়ণের বাসিন্দা মাখন মিয়া বলেন, আমার স্ত্রীর কাছে আমার সকল টাকা পয়সা জমা আছে। ভানু আমার স্ত্রীকে দিয়ে আমাকে তালাক দিয়েছে। আমার টাকা যা ছিল তা নেওয়ার জন্যই এমন করেছে।
আশ্রয়ণের বাসিন্দা সাহেনা ও তালেব আলী বলেন, ভানুর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। সে কিছু হলেই আমদের মারধর করে। দা-ছুড়ি দিয়ে ভয় দেখায়। তার কাছে আশ্রয়ণের নারীরা জিম্মি। আশ্রয়ণে এখন পর্যন্ত তিন-চারটি মহিলাকে সে নষ্ট করেছে।
ভানুর স্ত্রী শিউলি আক্তার বলেন, আমার স্বামীকে ওরা আশ্রয় দিয়েছে বলেই আমার স্বামী গিয়েছে। একজনের সম্মতি ছাড়া কোন কিছু হয় না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভানু মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা।
ধরমন্ডল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, তার অত্যাচারে আশ্রয়ণের প্রতিটি ঘরের বাসিন্দা অতিষ্ঠ। আমরা তাকে অনেকবার সর্তক করেছি। অনেক পরিবার চলে গেছে তার নারী ঘটিত কারণে। আশ্রয়ণ থেকে ভানুকে উচ্ছেদ না করলে এখানে কেউ বসবাস করতে পারবে না।
ধরমন্ডল ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, ভানুর ঘর থেকে আমরা দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছি। তার অত্যাচারের বিষয়টি আশ্রয়ণের বাসিন্দারা জানিয়েছে। বিষয়টি আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।