ঢাকা, বাংলাদেশ মঙ্গলবার ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ আর্কাইভ
হোম  »  ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া মৃত্যুর ১০ বছর পর নির্মাণ হচ্ছে আতকা (ভন্ড)পীরের মাজার, এলাকাবাসীর ক্ষোভ

মোঃ ফখরুদ্দিনঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মারা যাওয়ার ১০ বছর পর নির্মাণ করা হচ্ছে ছায়েদ মিয়া নামের কথিত এক পীরের মাজার। উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা গ্রামের পশ্চিমপাড়া বন্দেরবাড়ি এলাকায় সরাইল-বিটঘর-পানিশ্বর কাঁচা সড়কের পাশে পর্দার আড়ালে নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা মাজার। এ নিয়ে এলাকার আলেম-ওলামা ও তৌহিদি জনতার মাঝে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সরজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ও স্থানীয় এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত ১০ বছর আগে সৈয়দটুলা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মরহুম মহররম মিয়ার পুত্র ছায়েদ মিয়া আনুমানিক ৭০ বছর বয়সে স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পূর্বে ছায়েদ মিয়া পেশাগতভাবে তেমন কিছু না করলেও বিভিন্ন এলাকা দ্বারে দ্বারে ঘুরে তাওলা করে অনেকর মতে ভিক্ষা করে চাউল এনে হতদরিদ্রদের টানাটানি সংসার নির্বাহ করতেন । তাওলা করতে যাওয়ার সুবাধে বিভিন্ন এলাকায় তার কিছু ভক্তবৃন্দ সৃষ্টি হয়েছে।
রাতের বেলায় নিজের ছোট টিন শেডের ঘরে বেহালা বাজিয়ে সুরের মূর্ছনা তুলে তিনি গান গাইত বলে জানা যায়। তার মৃত্যুর পর তার এক ভক্ত (নারী) সরাইল-বিটঘর-পানিশ্বর কাঁচা সড়কের পাশে সরকারি খাসের জমিতে তাঁকে কবর দেন এবং তিনি বসতঘর নির্মাণ করে কথিত ভন্ড পীর ছায়েদ মিয়ার মাজার বানাতে চেষ্টা করেন।
এ সময় এলাকার আলেম-ওলামা ও তৌহিদি জনতার বাঁধার মুখে মাজার নির্মাণ বন্ধ রেখে সেই বসতবাড়ি মরহুম ছায়েদ মিয়ার সন্তানদের কাছে মৌখিকভাবে বিক্রি করে সেখান থেকে সেই নারী ভক্ত চলে যান।
সম্প্রতি সেই নারী ভক্ত ও অন্যান্য কিছু সংখ্যক লোক সংঘবদ্ধ করে গোপনে সেই কথিত (বাউল _ভিক্ষুক) পীরের মাজার পাকা করা শুরু করেন।
এ ব্যপারে আতকা পীর ছায়েদ মিয়ার ছেলে মুরাদ মিয়া কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমাদের এলাকার বাহিরের কিছু লোক এখানে এসে আমার বাবার পাকা মাজার নির্মাণ করা শুরু করেছেন। আমাদের পরিবারের কেউ মাজার বানানোর সাথে জড়িত নয়।
এ ব্যপারে স্থানীয় রায়হান হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতি ইলিয়াস সাহেব বলেন, ছায়েদ মিয়া এলাকার অতি সাধারণ লোক ছিলেন। পীর হওয়ার মত ধর্মীয় জ্ঞান ও মাদ্রাসা শিক্ষার কোনো আলামত তার মাঝে ছিল না। বিগত ১০ বছর আগে ছায়েদ মিয়া মারা যাওয়ার পর কিছু সংখ্যক লোক ঐ সময় তার মাজার বানানোর পাঁয়তারা করেছিল।
স্থানীয় আলেম-ওলামা, এলাকার মুরব্বী ও যুবকদের সাথে নিয়ে আমরা বাঁধা দেওয়ায় তখন মাজার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১০ বছর পর ফের কথিত পীরের মাজার নির্মাণ করা শুরু হয়েছে শুনতে পেরে হতাশাগ্রস্থ হয়েছি। এলাকার সবশ্রেণি পেশার লোকদের সাথে নিয়ে কথিত পীর ছায়েদ মিয়ার নামে কোনো মাজার হতে দেওয়া হবে না। এ ব্যপারে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।